বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২৫ পূর্বাহ্ন

পাট চাষে কৃষকদের লোকসান

নিজস্ব প্রতিবেদক::

অসময়ে বৃষ্টির কারণে ঝিনাইদহে পাটের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে ৭০ ভাগ জমির পাট কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষি অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় ২২ হাজার ৪’শ ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ২’শ ২০ হেক্টর, কালীগঞ্জে ১৬’শ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৮’শ ২০ হেক্টর, মহেশপুরে ৩ হাজার ২’শ ১০ হেক্টর, শৈলকুপায় ৭ হাজার ৯’শ ৫০ হেক্টর ও হরিণাকুণ্ডুতে ৩ হাজার ৬’শ ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৪’শ ৯৬ মেট্টিক টন। পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। কারণ হিসেবে কৃষকরা বলছেন, পাটের বাড়ন্ত সময় বৃষ্টির কারণে ফলন ভালো হয়নি।

শৈলকুপা উপজেলার উত্তর মির্জাপুর গ্রামের পাটচাষি রুহুল আমিন জানান, পাটবীজ জমিতে রোপণ করার পর পাটের চারা ভালো গজিয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পাটের গোড়ায় শেকড় গজিয়ে যায়। যে কারণে পাটের বাড়ন্ত কমে যাওয়ায় এবার ফলন কম হয়েছে।

মহেশপুর উপজেলার সামন্তা গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া জানান, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছিলেন। বৃষ্টির কারণে একটি জমির পাট বড় না হওয়ায় শুরুর দিকে তা কেটে অন্য ফসল আবাদ করেন। ২ বিঘা জমিতে যে পাট ছিল তারও ফলন ভালো হয়নি। এবছর পাট চাষে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার পবহাটি গ্রামের কৃষক আলিম উদ্দিন জানান, তিনি ১ বিঘা জমিতে এ বছর পাটের আবাদ করেছেন। পাট বীজ, চাষাবাদ, সার প্রয়োগ, নিড়ানি, পাট পরিচর্যা, শ্রমিক খরচ, পাট জমি থেকে কেটে পানিতে জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৩৪ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন ১৩ থেকে ১৪ মণ পাট পাবেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৮ হাজার টাকা। পাটকাঠি বিক্রি হবে ৫ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে তার লোকসান হচ্ছে ১ হাজার টাকা। তিনি বলেন, আমার জমিতে অন্যদের তুলনায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তবুও লোকসান হবে। তাহলে যাদের ফলন ভালো হয়নি তাদের কি পরিমাণ লোকসান গুনতে হচ্ছে।

শৈলকুপা উপজেলার ভাটই গ্রামের পাটচাষি রাশেদ মোল্লা বলেন, বর্তমানে বাজারে পাটের মণ ১৬’শ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও উৎপাদন কম হওয়ায় এবার লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, পাটের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও পূরণ হচ্ছে না উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। এক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনার আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করার হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com